আমি অধমের কী আর পরিচয় দিব!!
খুব বড় কোন মানুষ নই।দেখতে আপনাদের মতই ছোট এক বান্দা।আপনাদেরই এক মুসলিম ভাই।
আর সব থেকে বড় কথা হলো আমি কোন লেখক নই।সাজিয়ে গুছিয়ে খুব সুন্দর করে লিখতে পারি না।তাই কী ভাবে নিজের সম্মন্ধে সামান্য লিখতে হবে তাও বুঝতে পারছি না।তবুও নিজের মত করে কিছু বলি...
দু এক কলামে তো আর পুরা লাইফ হিস্টোরী আনা সম্ভব নয়,আর জীবন শুধু দু একদিনের গল্পরো নাম নয়।তাই যা বলা হয় তা ধারণা পাওয়ার জন্য মাত্র।
জন্ম ২০০০ সালের ৯ আগস্ট।যদিও সার্টিফিকেটে সালটা ২০০২ হয়ে গেছে।সার্টিফিকেট বয়স দিয়ে তো আর মূল বয়স আটকানো সম্ভব নয়।
জন্ম হয়েছিল নানাবাড়িতে।নানা বাড়ি রাজারহাট কুড়িগ্রামে অবস্থিত।
তবে জন্মের পর থেকে রংপুরেই বসবাস করছি স্থায়ী ভাবে। রংপুর শহরেই অবস্থান।আর এ শহরের সাথে মিশে আছে আমার শৈশব ও কৈশোরের স্মৃতিময় দিনগুলো।
আমার বাবার নাম ইসমাইল হোসেন।পেশায় একজন শিক্ষক।রংপুরে অবস্থিত "মুলাটোল মাদীনাতুল উলুম কামিল মাদ্রাসার" আরবী প্রভাষক।
আর মার নাম "মা"ই।(আসলে আম্মুর নাম খুব প্রয়োজন ব্যতিরেক উল্লেখ করি না।বোনদের নামো না।ছোট বেলায় আম্মু এই শিক্ষা দিয়েছেন।অবশ্য এর হেতু তখন বুঝে আসে নি কিন্তু এখন দুনিয়ার হালচাল দেখে ভালোই বুঝে এসেছে।)
ভাই-বোনদের মধ্যে আমি বড়।
শৈশব ও কৈশোরঃ
শৈশব ও কৈশোর কাল বলতে গেলে অধিকাংশ সময় এই রংপুরেই কেটেছে।রংপুরের মাটিতেই মিশে আছে সেই সব মধুমাখা দিনগুলো।যা আজো মনে পড়লে আমি আনমনে হয়ে যাই।
কত হাসিখুশির দিন ছিল তখন।
কত বন্ধু ছিল।মাঠে মাঠে কত খেলে বেড়িয়েছি।কত আনন্দ করেছি বলার মত না।আর এখন তো শহরের দিকে এ সব নেই বললেই চলে।
শৈশব-কৈশোরের সব ঘটনা তো আর লেখা যাবে না!!
তবুও স্মৃতি থেকে দু একটি স্মরণীয় ও শিক্ষণীয় ঘটনা বলি..
🔶 তখন বয়স কত আর হবে।নয় বা দশ।
সাইকেল চালা শিখেছি বেশ কিছু দিন আগে।আব্বু নতুন একটা সাইকেল কিনে দিয়েছে।
এই সাইকেল নিয়ে আমি সময় পাইলেই বেড়িয়ে পড়ি।একা বা জোঠবদ্ধ হয়ে ঘুরে বেড়াতাম এদিক সেদিক।রোদ বৃষ্টি সবসময়।আব্বু ততটা বাঁধা দিত না।তবে আম্মুর শর্ত থাকত অনেক।
এটা না পড়লে সাইকেল চালানো যাবে না।ওটা না করলে সাইকেল চালা যাবে না।বলতে গেলে তখন আম্মুর সব শর্তই সাইকেল কেন্দিক থাকত।আমিও যে ভাবেই হোক শর্ত পূরোণ করেই সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়তা।
এটা আমার নেশা ছিলো বলা যায়।আর আমি প্রকৃতির খুব পাগল।যেখানে সবুজের দেখা মিলে ,যেখানেই ঘন গাছগাছালি ও মনোরম পরিবেশ সেখানেই বসে পড়তাম।আধা ঘন্টা বা তারো অধিক সময় আমি বসে থাকতাম ।বসে থাকার জন্য অবশ্য কোন কারণ লাগত না।গাছগাছালি ভালো লেগেছে তাই বসে আছি।গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসে থাকতা।কত কিছু ভাবতাম!!
তো একদিন হলো কী!!
এক শুক্রবার আম্মু একটু অসুস্থ।আম্মু কী কী কাজ করতে বললেন।কিন্তু আমার সাইকেল চালানোর ভূত মাথায় উঠেছে।আম্মু বারবার বললেন কাজটা করে যা!!
কিন্তু সে দিন কেন যেন ইচ্ছা করেই কাজটা করলাম না!!
বেড়িয়ে গেলাম সাইকেল নিয়ে।
অনেক দিন ধরেই সাইকেল চালাচ্ছি এক্সিডেন্ট তেমন একটা করি নি।আর সাইকেল চালাতেও পাকা হয়ে গেছি বলা চলে।কিন্তু সেই দিন হলো কী আমি সাইকেল চালাচ্ছি তো সামনে দেখলাম একটি ছাগলের ছোট বাচ্চা।ব্রেক ধরলাম কিন্তু ভালো ভাবে ব্রেক কাজ না করায় প্রায় ছাগলের গায়ে লাগে লাগে অবস্থা।কোন রকম হেন্ডেল ঘুরিয়ে পাশ কাটালাম।কিন্তু সামনে একটা গর্ত ছিল যা আমার চোখে পড়ে নি। আর সামনের চাকা গিয়ে গর্তে আটকে গেল।আর আমি সাইকেল সহ গেলাম ধপাস করে ...!!
মাটিতে পড়ার পর সাইকেলের হ্যান্ডেল আমার উপরের ডান পাশের দাতের সাথে সেই জোড়ে লাগে।
তারপর যা হবার তা তো হয়েই গেল!!
ততক্ষণে বুঝে ফেলেছি হঠাত এই বিপদ মায়ের কথা না শোনার ফল।আম্মুর কথাটা যদি শুনতাম তাহলে হয়ত আল্লাহ আমাকে এই বিপদ থেকে রক্ষা করতেন ।
পরে আম্মুর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।